কেমন ছিল আজকের ভারতীয় জাতীয় পতাকা সর্বপ্রথম : নেপচুন নিউজ পোর্টাল

যেকোনো স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকা হয় স্বাধীনতার প্রতীক এবং সম্মান ও গৌরবের  প্রতীক। আজ আমাদের যে জাতীয় পতাকা আমরা দেখি আসলে তা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা পরিবর্তনের পর পাওয়া। 

আমাদের দেশের সর্বপ্রথম জাতীয় পতাকা আমরা পেয়েছিলাম ১৮৫৭ সালে যখন ব্রিটিশ রাজ শুরু হয় । তার আগে ভারতের বুকে যে যে রাজা রাজত্ব করেছেন তাদের আলাদা আলাদা পতাকা ছিল। ১৮৫৭ সালের পর  যখন ব্রিটিশরা ভারতে শাসন করতে শুরু করে তখন তারা পুরো দেশের জন্য এক জাতীয় পতাকা বানাই যা দেখতে ছিল নিচের মতো. 

ব্রিটিশ রাজ ভারতের জাতীয় পতাকা 


প্ৰথম পাতাকাটিতে ছিল ব্রিটিশ রাজের ছোঁয়া। ১৯০৫ সালে বেঙ্গল আলাদা হওয়ার পর দ্বিতীয় পতাকাটি সামনে হয়। এই পতাকা ভারতের প্রথম স্বদেশি জাতীয় পতাকাও। এই পতাকাটি ১৯০৬ সালের ৭ ঐ অগাস্ট উত্তোলন করা হয় কলকাতার পার্সি বাগান স্কয়ারে। এই পাতাকাতে তিনটে রং ছিল লাল হলুদ এবং সবুজ। দেখুন কেমন ছিল পতাকাটি। 

প্রথম জাতীয় পতাকা: ১৯০৬ সাল  


১৯০৭ সালের ২২ অগাস্ট বিদেশের বুকে  দ্বিতীয় পতাকাটি উত্তোলন করেন ম্যাডাম ভিকাজী কামা। এই পাতাকাটিকে 'বার্লিন কমিটি ফ্ল্যাগ' ও বলা হয়। এই পতাকাটি অনেকটাই প্রথম পতাকাটির মতো দেখতে সবুজ রঙের ওপর পদ্মের পরিবর্তে সপ্তর্শি দেখতে পাওয়া যায়। এই পতাকাটি ম্যাডাম ভিকাজী কাম, বিনায়ক দামোদর সাভারকার এবং শ্যামজী কৃষ্ণ ভর্মা। 


দ্বিতীয় জাতীয় পতাকা: ১৯০৭ সাল 


এরপর ১৯১৭ সালে যখন আমাদের জাতীয় সংগ্রাম ব্যাপক আকার নিয়েছিল এবং হোম রুল মুভমেন্ট এর দাবি ওঠে।  তখন অ্যানি বেসান্ত এবং লোক মান্য তিলক তৃতীয় পতাকাটি উত্তোলন করেন। এই পাতাকাটিতে ব্রিটিশ পাতাকাকেও স্থান দেওয়া হয়েছিল তাই আনেকে এই পতাকাটির বিরোধিতা করেন।


তৃতীয় জাতীয় পতাকা: ১৯১৭ সাল 


১৯১৭ সাল পর্যন্ত পাতাকাগুলিতে লাল রঙ হিন্দুত্বের এবং সবুজ রঙ ইসলাম ধর্মের প্রতীক মানা হচ্ছিল। কিন্তু গান্ধীজী বলেন ভারতে আরো অনেক ধর্মের মানুষ থাকেন। আমাদের জাতীয় পতাকায় তাদের ও প্রতীক হিসাবে সাদা রঙ ব্যবহার করা উচিত। ১৯২২ সালে ভারতের চতুর্থ জাতীয় পতাকায় স্থান পেলো লাল, সবুজ এবং সাদা রং। পতাকার মধ্যে যুক্ত করা হল গান্ধীজীর চারখা যা তিনটে রঙেই সমানভাবে বিরাজমান ছিল। পতাকাটির বার্তা ছিল সব ধর্মের মানুষ মিলে দেশকে মুক্ত করার। 

চতুর্থ জাতীয় পতাকা : ১৯২২ সাল 


১৯৩১ সালে ভারতের জাতীয় পতাকা আরও একবার পরিবর্তন করা হলো। অনেকের মতেই ধর্মের সাথে জাতীয় পতাকা একসাথে জুড়ে দেখা ঠিক হবে না। তখন ভারত পেলো প্রথম তেরঙ্গা। যাতে গেরুয়া সাহস ও শক্তির প্রতীক, সাদা সৎ ও সত্যের প্রতীক , সবুজ উন্নতি ও প্রকৃষ্টতার প্রতীক হিসেবে দেখানো হলো। 

প্রথম তেরঙ্গা : ১৯৩১ সাল 



১৯৪৭ সালে ভারত যখন ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয় তখন ২২ জুলাই রাজেন্দ্র প্রাসাদ এর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির দায়ীত্ব ছিল স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা কেমন হবে তা ঠিক করার। সেই সময় সবার সম্মতিতে আমরা আমাদের আজকের প্রিয়া তেরঙ্গা পেলাম যা অনেকটাই ১৯৩১ সালের পতাকার মতো ছিল। নতুন পতাকায় ছারখার পরিবর্তে অশোক চক্র যুক্ত করা হলো। 


১৯৮৭ সালের ২২ জুলাই এই  জাতীয় পতাকা বানানো হয়।
 যা আমাদের বর্তমান জাতীয় পতাকা। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ